শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন
এক নজরে :
ইসলামী ব্যাংক নওয়াপাড়ার বিরুদ্ধে মার্জিনের টাকা ছাড়াই এলসি সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ বেনাপোলে বিজিবির অভিযানে চোরাচালান পণ্য আটক বেনাপোল মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সেলিনা আক্তার কে বিদায় সংবর্ধনা শেখ মুজিবের দল বাকশাল বিলুপ্তি করে প্রথমে শেখ হাসিনা তার পিতার সাথে বেঈমানি করেছে -তৃপ্তি যশোর চাঁনপাড়া বাজার এলাকায় বিজিবির অভিযানে ১ পিস স্বর্ণবারসহ এক পাচারকারী আটক সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন উপলক্ষে ৭ সদস্যের কমিশন গঠন সরকারি নির্দেশনা অমান্য : অভয়নগরে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে সেবা বিপর্যয় শার্শায় ট্রেনে কাটা পড়ে চান্দু নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু নাভারণে সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল আলীমের স্থায়ী বরখাস্তের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন বেনাপোলে বৌদ্ধদের শ্রেষ্ঠ ধর্মীয় উৎসব ‘কঠিন চীবর দানোৎসব’ অনুষ্ঠিত

গদখালীতে শীতের আগমনে ফুলচাষে ব্যস্ত সময়, টিউলিপে নতুন সম্ভাবনার আভাস

মোঃ মাসুদুর রহমান শেখ, বেনাপোলঃ
শীতের আগমনী হাওয়ায় আবারও প্রাণ ফিরে পেয়েছে ‘ফুলের রাজ্য’ যশোরের ঝিকরগাছার গদখালী ও পানিসারা অঞ্চল। মাঠে মাঠে রঙিন ফুলের চারা, কুয়াশা ভেদ করে ব্যস্ত চাষিরা, চারদিকে ছড়িয়ে আছে ফুলের গন্ধ আর উৎসবের আমেজ, ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত যে মৌসুমকে বলা হয় ফুলের ভরা সময়, তার প্রস্তুতি এখন পুরোদমে চলছে।

চাষিরা এখন সকাল-সন্ধ্যা ব্যস্ত বীজতলা তৈরিতে, জমিতে সেচ ও পরিচর্যায়। আগাছা নিড়ানো, স্প্রে করা, মরা গাছ তুলে ফেলা সব মিলিয়ে ফুলের মৌসুমকে সামনে রেখে চলছে পরিশ্রমের প্রতিযোগিতা। আসন্ন বিজয় দিবস, নববর্ষ, বসন্তবরণ ও ভালোবাসা দিবসের বাজার ধরাই এখন তাদের মূল লক্ষ্য।

এবারের মৌসুমে গদখালীর মাঠে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, গোলাপ, গাঁদা, জারবেরা, জিপসি ও চন্দ্রমল্লিকার পাশাপাশি পরীক্ষামূলকভাবে টিউলিপ চাষ করে চমক দেখিয়েছেন কয়েকজন চাষি।

টিউলিপ চাষী ইসমাইল হোসেন জানান, টিউলিপ মূলত শীতপ্রধান অঞ্চলের ফুল চাষে সাধারণত ৫ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। এমন আবহাওয়া বাংলাদেশে বিরল হলেও, গদখালীর অনুকূল মাটি ও শীতকালের হালকা ঠান্ডা এই ফুল চাষে আশাব্যঞ্জক সাড়া দিয়েছে। স্থানীয় কৃষিবিদরা বলছেন, দেশে বাণিজ্যিকভাবে টিউলিপ চাষের সম্ভাবনা যাচাইয়ে গদখালী হতে পারে নতুন দিগন্তের সূচনা।

এদিকে ফুলের ভরা মৌসুম সামনে রেখে বাজারেও শুরু হয়েছে সরব প্রস্তুতি। গদখালী ফুলবাজারে প্রতিদিনই বিক্রি হচ্ছে কোটি টাকার ফুল। পাইকাররা আসছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৪ থেকে ৫ টাকা দরে, রজনীগন্ধা ৬ টাকা, গ্লাডিওলাস ১২–১৫ টাকা, আর জারবেরা ১২–১৪ টাকায়।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির তথ্যমতে, যশোর অঞ্চলে প্রায় ৭ হাজার ফুলচাষি ১২ শতাধিক হেক্টর জমিতে ফুল চাষ করেন। দেশের মোট ফুলের চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগই সরবরাহ হয় এখান থেকে।

চলতি বছরের গ্রীষ্মে অতিবৃষ্টি ও তীব্র গরমে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাষিদের মনে নতুন আশার আলো। তারা বলছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে এই মৌসুমে শত কোটি টাকার ফুল বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, এই উপজেলায় বর্তমানে প্রায় ৬৪০ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ হয়েছে। এখন এখানে বিদেশি কিছু ফুলও পরীক্ষামূলকভাবে চাষ হচ্ছে। এই ফুলচাষের সঙ্গে প্রায় এক হাজার কৃষক এবং ৫০ হাজারের বেশি শ্রমিক সরাসরি যুক্ত। বছরে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার ফুলের লেনদেন হয় এই অঞ্চলে। কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছি, যাতে ফুলের বাগানের পরিধি দিন দিন আরও বাড়ে।

সব মিলিয়ে শীতের শুরুতেই আবারও রঙে রঙে ভরে উঠছে গদখালী। মাঠজুড়ে ফুটতে শুরু করেছে নতুন আশার ফুল যার মাঝে টিউলিপের পাপড়িও হয়তো লিখে দেবে বাংলাদেশের ফুলচাষে এক নতুন অধ্যায়।



Our Like Page