অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া মডেল কলেজের অধ্যক্ষ মহিদুল ইসলাম খাঁনের বিরুদ্ধে জাল সনদে ২৫ বছর চাকরিতে বহালসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
তথ্যানুসন্ধান ও দুদুকের অভিযোগ পত্র থেকে জানা গেছে, নওয়াপাড়া মডেল কলেজের অধ্যক্ষ মহিদুল ইসলাম খাঁন ১৯৯৯ সালে যশোর সদরে অবস্থিত সিঙ্গিয়া আদর্শ ডিগ্রি কলেজের কম্পিউটার বিষয়ে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। এসময় তিনি কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জাল সনদ জমা দিয়েছেন বলে দুদুকের কাছে পাঠানো অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই সময় তিনি কম্পিউটার প্রশিক্ষণের যে সনদ দাখিল করেছিলেন তার রোল নাম্বর ০৫৩৩ ও সিরিয়াল নম্বর ছিলো ০১৩১।
২০০৩ সালের ৪ জুন সিঙ্গিয়া আদর্শ ডিগ্রি কলেজর এক অডিটে মহিদুল ইসলামের সনদটি যাচাইয়ের জন্য সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বগুড়ার বহুভাষী সাঁটলিপি প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমীতে (নট্রামস) পাঠানো হয়। ৯ সেপ্টেম্বর ২০০৩ তারিখ বহুভাষী সাঁটলিপি প্রশিক্ষণ ও গবেষনা একাডেমী (নট্রামস) বগুড়া কর্তৃপক্ষ সনদটি তাদের প্রদত্ত নয় বলে চিঠিতে জানায়।
এরপর তিনি২০১৭ সালে নওয়াপাড়া মডেল কলেজে অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন। সে সময়ক্ষমতাসীন দলের এমপি রণজিত রায় কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন। অভিযোগ আছে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নিয়ে মহিদুল ইসলামকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগদেন। কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ডিগ্রি কলেজ সে জন্য অধ্যক্ষ নিয়োগেরসকল কাগজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের জন্য পাঠনো হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়কর্তৃপক্ষ ১৯ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে সেই নিয়োগটি বাতিল করেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েরভাইস-চ্যান্সেলরের আদেশক্রমে ডা. মো. মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত স্মারক নম্বর-আইএনএস৩৬৬৩৭ (১) নিয়োগ বাতিলের বিষয় উল্লেখ করেন। সেই আদেশে বলা হয় অধ্যক্ষহিসাবে যোগদানের জন্য যে শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা আবশ্যক তা মহিদুল ইসলাম খানেরনেই।
অভিযোগ উঠেছে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরে মোটা টাকা ঘুষ দিয়ে এমপিওভূক্ত হয়ে বেতন ভাতা প্রাপ্ত হয়েছেন। এছাড়া তিনি সিঙ্গিয়া আদর্শ ডিগ্রি কলেজথেকে নিয়ম না মেনে আওয়ামী লীগের দাপট দেখিয়ে চাকরি থেকে অব্যাহতিপত্র নেওয়ারপরেও কলেজের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বেতন উত্তোলন করেন বলে অভিযোগরয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন যশোর শাখার উপ-পরিচালক আল মামুন বলেন, বসুন্দিয়াসিঙ্গিয়া আদর্শ ডিগ্রি কলেজের সাবেক কম্পিউটার প্রভাষক মহিদুল ইসলাম খান এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে কি না তা খুঁজে দেখতে হবে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাহিদুল ইসলাম খাঁন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার সনদ জাল নয়। আমি নট্রামস এর একটি শাখা থেকে কোর্স সম্পন্ন করেছি। সেই শাখা আমাকে সনদ দিয়েছে।’
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোর এর সহকারি কলেজ পরিদর্শক মদন মোহন দাস বলেন, ‘২০১৭ সালে আমাদের বোর্ড থেকে ওই কলেজে কোন নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অভিযুক্ত অধ্যক্ষ হয়তো অন্য কোন ভাবে নিয়োগ নিয়েছেন।’