সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ০১:৪৭ পূর্বাহ্ন
এক নজরে :
সাংবাদিকতায় প্রযুক্তির ছোঁয়া: পিআইবিতে মোবাইল সাংবাদিকতায় প্রশিক্ষণ অভয়নগরে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ও নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত যশোরে জুমার নামাজে সিইসি ; বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে বিশেষ দোয়া বেনাপোলে বিজিবির অভিযানে বিভিন্ন রকম অবৈধ সামগ্রী আটক বাগআঁচড়া সাতমাইলে মুদিখানা দোকানে, ২ লক্ষ টাকার মালামাল লুট বেনাপোল স্থলবন্দরে বিলাসবহুল মসজিদ ভবনের শুভ উদ্বোধন অভয়নগর প্রেসক্লাবের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত বেনাপোল ইমিগ্রেশনে জাতীয় শ্রমিকলীগ নেতা গ্রেফতার সাত মাসে বিজিবির অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ ৩৫ জন আটক সীমান্তে মানবপাচার প্রতিরোধ প্রকল্প পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব

সাতক্ষীরায় চাঁদার দাবিতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা : ১০ পুলিশ কর্মকর্তার নামে মামলা

গাজী হাবিব, সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরায় বিশুদ্ধ পানি ব্যবসায়ীকে দুই লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নিহতের স্ত্রী মোছা: শাহানারা খাতুন বাদী হয়ে বুধবার (১৩ নভেম্বর) সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ২০১৩ সালের নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে এ মামলা (পিটিশন-১০) দায়ের করেন।

বিচারক চাঁদ মো: আব্দুল আলীম আল রাজী আগামী ৫ জানুয়ারি খুলনা রেঞ্জের উপমহা পুলিশ পরিদর্শককে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি নিজে অথবা অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের পদমর্যাদার নিচে নয় এমন কোন পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারবেন।

মামলায় তৎকালিন পুলিশ সুপার সাজ্জাদ হোসেন, সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তারসহ ১০ জন পুলিশ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা চার জনকে আসামি শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে।

বর্ণিত মামলায় নিহতের নাম দেলোয়ার হোসেন। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদহা মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা।

মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন সাতক্ষীরা তৎকালীন গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আহম্মেদ হাসেমী, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মারুফ হোসেন, গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শাহারিয়ার হোসেন, সদর থানার উপ পরিদর্শক অনুপ কুমার দাস, গোয়েন্দা পুলিশের উপ পরিদর্শক রবিন মন্ডল, উপ পরিদর্শক মিজানুর রহমান, সহকারী উপ পরিদর্শক রাজু আহম্মেদ ও সহকারী উপ পরিদর্শক বিষ্ণুপদ।

মামলার বিবরণে জানা যায়, বাদীর স্বামী দেলোয়ার হোসেন ২০১৮ সাল থেকে বাঁশদহা বাজারে বিশুদ্ধ খাবার পানি প্রস্তুত ও সরবরাহের নতুন ব্যবসা শুরু করেন। এ সময় তার ব্যবসায় কোন সরকারি অনুমোদন ছিলো না।

২০১৮ সালে ১২ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক রাজু আহম্মেদ বাদীর স্বামী দেলোয়ার হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আহম্মেদ হাসেমী ব্যবসা সংক্রান্ত কাগজপত্র না থাকায় তার কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন।

সে সময় দেলোয়ার হোসেন বলেন, তিনি এত টাকা কোথায় পাবেন? একপর্যায়ে পরের দিন তিনি পুলিশ সুপার সাজ্জাদ হোসেনের কাছে অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপার ভিকটিমকে সহকারী পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তারের কাছে পাঠিয়ে দেন।

এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে পুলিশ ২০১৮ সালের ১৪ জুলাই সন্ধ্যায় পুনারায় কয়েকজন পুলিশ ভিকটিম দেলোয়ারকে বাড়ি থেকে তুলে আনে। রাত ১০ টার দিকে উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান ও সহকারী উপ পরিদর্শক রাজু আহম্মেদ বাদীর কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তার স্বামীকে রাতেই ক্রসফায়ার দেওয়ার হুমকি দেয়। টাকা যোগাড়ের জন্য কয়েক দিন সময় চাইলে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা চলে যায়।

এরপর থেকে বাদীনি ও তার স্বজনরা দেলোয়ারের সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা চালায়। এর পরের দিন অর্থাৎ ১৫ জুলাই সকালে বাঁশদহা কয়ার বিল নামক স্থানে দেলোয়ারের গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পায়। দেলোয়ারের গলার বাম কাধেঁর উপরে একটি ও ডান বোগলের নিচে পিঠের দিকে একটি গুলির চিহ্ন দেখা যায়।

এ সময় আবুল কালাম আজাদ নামের আরো একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ সেখানে পড়ে ছিলো। চাঁদার দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় দেলোয়ারকে পুলিশ ক্রসফায়ারের নামে গুলি করে হত্যা করেছে বলে বাদী মনে করেন। ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতন্ত শেষে দেলোয়ারের লাশ তার স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মামলা করার অনুকূল পরিবেশ না থাকায় ও বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার এ মামলা দায়ের করেন বাদী।

বাদী পক্ষের আইনজীবী এড: মো: হাফিজুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।



Our Like Page