গাজী হাবিব, সাতক্ষীরা:
২০২০ সালের ২৬ মার্চ দিবাগত রাত একটার দিকে সাতক্ষীরা সদরের ধুলিহরে বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট শেষে ধুলিহর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের সহ সভাপতি অহেদ আলীকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যার পর লাশ পার্শ্ববর্তী আমবাগানে ফেলে রেখে যাওয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় সাতক্ষীরা জেলা শ্রামিক লীগের সভাপতি সাইফুল করিম সাবুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (০৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তাকে তার শহরের প্রাণসায়ের এলাকার বাড়ি থেকেত গ্রেপ্তার করা হয়। সাইফুল করিম সাবুর বাবার নাম আব্দুল করিম।
মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৬ মার্চ দিবাগত রাত একটার দিকে সদর উপজেলার ধুলিহর গ্রামের বাড়িতে ঢুকে সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাহ্উদ্দিন ও গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিদুলের নির্দেশে ধুলিহর গ্রামের নবাত আলী গাজীর স্ত্রী, অহেদ আলীর স্ত্রীর কাছে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা , ছয় ভরি সোনার গহনা ও একটি মোটর সাইকেল ও বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সাত লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে। পরে প্রায় সাত লক্ষাধিক টাকার মালামাল ভাঙচুর করে। আসামী মিজানুর রহমান ওরফে বাবু সানা অহেদ আলীর শিশু সন্তানকে পানিতে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। পর অহেদ আলীকে মারতে মারতে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরে তাকে নির্যাতন করে খুন করে লাশ পার্শ্ববর্তী একটি বাগানে ফেলে রেখে যায়। পরদিন সকালে লোকমুখে শুনে অহেদ আলীর লাশ দেখতে পান তার স্ত্রী পারুল বেগম ও তার স্বজনরা। পরে ওই লাশ পুলিশ ও আসামীরা তড়িঘড়ি করে দাফন করতে বাধ্য করে।
পরবর্তীতে গত ২৭ আগষ্ঠ নিহত অহেদ আলীর স্ত্রী পারুল বেগম বাদি হয়ে সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতে অপহরণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের তৎকালিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাহউদ্দিন, গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সহ সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহম্মেদসহ ৫৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
আদালতের বিচারক নয়ন কুমার বড়াল মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। একইসাথে একজন সহকারি পুলিশ সুপার বা পুলিশ সুপার মর্যাদার একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে দিয়ে মামলার তদন্ত করানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
সে অনুযায়ী গত ৩ সেপ্টেম্বর মামলাটি (১০নং) থানায় রেকর্ড করা হয়। তবে মামলায় উল্লেখিত ৫৭ জনের মধ্যে সাইফুল করিম সাবুর নাম নেই।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামিনুল হক গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজ (সোমবার) তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে তিনি ওই মামলার সন্দিগ্ধ আসামী।