দক্ষিণ বাংলা ডেস্ক:
নওয়াপাড়াসহ জেলা জুড়েই কোনো না কোনো সমস্যা দেখিয়ে, অজুহাত বের করে বা অনেক ক্ষেত্রে অজুহাত ছাড়াই সিন্ডিকেট করা হয় বাজারে। বাজার সিন্ডিকেট না ভাঙা পর্যন্ত ক্রেতাদের দুর্ভোগ কমবে না। সিন্ডিকেটের কারনেই কমছেনা ডিম ও মুরগির দাম অভিযোগ ক্রেতাদের।
সরকারি পর্যায়ে ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণের পরও যশোরে জরুরি এ নিত্যপণ্য দুটির দাম কমেনি। উৎপাদন খরচ বেশি ও চাহিদার তুলনায় বাজারে সরবরাহ কম থাকায় দাম কমছে না বলছেন মুরগি এবং ডিম ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা।
নতুন দামে ডিম ও মুরগি বিক্রি হচ্ছে না যশোরসহ জেলা জুড়েই বাজারে। এ দুটি পণ্য আগের থেকে বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে। ১৫ সেপ্টেম্বর প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ডিম উৎপাদক পর্যায়ে প্রতি পিস ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি ১১ টাকা ০১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সোনালি মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে কেজিপ্রতি ২৬০ টাকা ৭৮ পয়সা, পাইকারি ২৬৪ টাকা ৫৭ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে কেজিপ্রতি ১৬৮ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারি ১৭২ টাকা ৬১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে নওয়াপাড়াসহ জেলা জুড়েই বাজারে এর উল্টো চিত্র। ডিম বিক্রি হচ্ছে আগের থেকে বেশি দামে।
শহরের বিভিন্ন বাজারে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকা হালিতে। সোনালী মুরগির ডিম ৬০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৬৬ টাকা, হাঁসের ডিম ৭২ টাকা এবং কোয়েল পাখির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকা হালি দরে। অন্যদিকে কেজিতে আরও ২০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা কেজিতে। সোনালী মুরগি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকা কেজি দরে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজিতে।
যশোর জেলার সকল বাজারে মণিরামপুর, কেশবপুর, ঝিকরগাছা ও সাতক্ষীরা থেকে মুরগি সরবরাহ করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ভারী বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ও বন্যার কারণে এসকল অঞ্চল থেকে মুরগি ও ডিমের সরবরাহ কম আসছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। এছাড়া মুরগির ফিডের বাড়তি দামের কারণে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় কমছে না ডিম ও মুরগির দাম, দাবি বিক্রেতাদের।
নওয়াপাড়া বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘খামারগুলোতে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় আমাদেরও বাড়তি দামে ডিম আনতে হচ্ছে’। আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘বাজারে চাহিদার তুলনায় ডিম ও মুরগি কম আছে। বন্যা ও জলাবদ্ধতার কারণে আমরা ডিম ও মুরগি কম পাচ্ছি’।
মুরগি বিক্রেতা বলেন, খামারে পর্যাপ্ত মুরগি নেই। বাড়তি দামে মুরগি এনে বিক্রি করতে হচ্ছে। আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে গত এক সপ্তাহ আমরা মুরগি কম পেয়েছি। চড়া দামে মুরগি আনতে হচ্ছে। তাই সরকারের বেধে দেয়া দামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না’।
অন্যদিকে, ক্রেতাদের অভিযোগ বাজার সিন্ডিকেট না ভাঙা পর্যন্ত স্বস্তি ফিরবে না। জরুরিভাবে প্রতিটি নিত্যপণ্যতে সক্রিয় সিন্ডিকেট ভাঙার দাবি তাদের। বকচর এলাকার নুরুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনকে বাজার মনিটরিং করতে হবে। তা নাহলে আমরা সুফল পাবো না। মুড়লী এলাকার আরিফুল ইসলাম বলেন, সরকার সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দিয়েছে, এখন তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করুক। সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে বাঁচুক। আরবপুর এলাকার মেহেদী হাসান বলেন, কোনো না কোনো সমস্যা দেখিয়ে, অজুহাত বের করে বা অনেক ক্ষেত্রে অজুহাত ছাড়াই সিন্ডিকেট করা হয়। বাজার সিন্ডিকেট না ভাঙা পর্যন্ত ক্রেতাদের দুর্ভোগ কমবে না। তাই সবার আগে এটি বন্ধ করতে হবে।