সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন
এক নজরে :
সাংবাদিকতায় প্রযুক্তির ছোঁয়া: পিআইবিতে মোবাইল সাংবাদিকতায় প্রশিক্ষণ অভয়নগরে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ও নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত যশোরে জুমার নামাজে সিইসি ; বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে বিশেষ দোয়া বেনাপোলে বিজিবির অভিযানে বিভিন্ন রকম অবৈধ সামগ্রী আটক বাগআঁচড়া সাতমাইলে মুদিখানা দোকানে, ২ লক্ষ টাকার মালামাল লুট বেনাপোল স্থলবন্দরে বিলাসবহুল মসজিদ ভবনের শুভ উদ্বোধন অভয়নগর প্রেসক্লাবের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত বেনাপোল ইমিগ্রেশনে জাতীয় শ্রমিকলীগ নেতা গ্রেফতার সাত মাসে বিজিবির অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ ৩৫ জন আটক সীমান্তে মানবপাচার প্রতিরোধ প্রকল্প পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব

শিক্ষকের সম্মানেই শিক্ষার ভবিষ্যৎ

মো: তানজিম হোসাইন :
নিঃশব্দে বইতে থাকা হাহাকার ফেটে পড়েছে এক মহা প্রতিবাদে। শিক্ষকদের মুখে নেই হাসি, নেই কোনো প্রত্যাশার আলো। তারা হোয়াইট বোর্ড ছেড়ে দাঁড়িয়েছে পথে, নিজেদের অধিকার আদায়ের শেষ আশায়।

১৫ই অক্টোবর, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ১ দাবী জাতীয়করণের লক্ষ্যে অবস্থান কর্মসূচীর ডাক দিয়েছে “এম.পি.ওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট।”
দীর্ঘদিনের অন্যায়, অবিচার, এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে থাকা এই শিক্ষকরা আজ পথে নেমেছেন, তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। তাদের জন্য এই লড়াই নতুন নয়—ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাদের প্রায়ই রাস্তায় নামতে হয়। এই দেশের সরকার এবং শিক্ষা ব্যবস্থা এম.পি.ওভুক্ত শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান এবং সম্মানি দিতে চাইনি কখনোই।

“বহুদিন কাটল আড়ালে,
বঞ্চনার বোঝা মাথায়।
দেয়নি কিছু, শুধু নিয়েছে,
প্রতিশ্রুতির ফাঁদে ফাঁসায়।”

বিগত সরকারগুলো বারবার আশ্বাসের বাতাস দিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করেছে। তারা বলেছে, “সমস্যা সমাধান হবে, অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে”—কিন্তু প্রতিবারই সেই আশ্বাস মিলিয়ে গেছে অন্তহীন অপেক্ষার গহ্বরে। শিক্ষকেরা থেকে গেছেন একই জায়গায়—সামান্য বেতনে, তুচ্ছ বাড়িভাড়ায়, আর অধিকারবিহীন জীবনে। এই লড়াই শুধু তাদের জন্য নয়— এই লড়াই আগামী প্রজন্মের জন্যও, যারা একদিন শিক্ষার আলো পাবে সমানভাবে।

শিক্ষক যদি শূন্য পকেটে, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রতিদিন ক্লাসরুমে দাঁড়ান, তবে কীভাবে তিনি দক্ষ শিক্ষার্থী গড়ে তুলবেন? শিক্ষকের মানসিক শান্তি, তার আর্থিক নিরাপত্তা যদি নিশ্চিত না হয়, তবে তার পক্ষে সর্বোচ্চ মনোযোগ ও পরিশ্রম দিয়ে শিক্ষাদান করা সম্ভব নয়। একটি জাতির ভবিষ্যৎ যে মানুষের হাতে, সেই শিক্ষকই যদি অপমানিত হন, বঞ্চিত হন, তবে শিক্ষার মানোন্নয়ন হবে কেমন করে?

শিক্ষকেরা যখন তাদের ন্যায্য সম্মান ও সম্মানি পান না, তখন শিক্ষাব্যবস্থা কেবল নামে টিকে থাকে, আসল মান হারিয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের গড়তে হলে, শিক্ষকদের আগে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে—তাদের দিতে হবে প্রাপ্য মর্যাদা, ন্যায্য অধিকার।

শিক্ষা ব্যবস্থার জাতীয়করণই হলো এর একমাত্র সমাধান। জাতীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষকরা পাবেন স্থিতিশীল আয়ের নিশ্চয়তা, তাদের বেঁচে থাকার মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হবে। শিক্ষক যদি শূন্য হাতে লড়াই করতে থাকেন, তবে শিক্ষার্থীদের হাতে ভবিষ্যতের মশাল তুলে দেওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে না।

জাতীয়করণ এই শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের জন্য একমাত্র মুক্তির পথ। এটি কেবল তাদের জীবনের জন্য নয়, এটি গোটা জাতির ভবিষ্যতের জন্য অপরিহার্য। শিক্ষকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা না হলে, শিক্ষার মানোন্নয়ন অসম্ভব। শিক্ষক বাঁচলে শিক্ষা বাঁচবে।

শিক্ষকদের প্রাপ্য সম্মান ফিরিয়ে আনতে হবে, তাদের অধিকার দিতে হবে। শিক্ষা জাতীয়করণই একমাত্র সঠিক পথ, যেখানে শিক্ষকরা ফিরে পাবেন তাদের মর্যাদা এবং আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা পাবে নতুন আলোকিত ভবিষ্যত।

অধিকার প্রতিষ্টায় এই লড়াই হোক আমাদের শেষ লড়াই!

মো: তানজিম হোসাইন
কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক,
বৈষম্যবিরোধী সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ



Our Like Page