দক্ষিণ বাংলা ডেস্ক:
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের চাঁদা দাবিতে হাসমত আলী নামে এক ব্যক্তিকে মারপিট, গরু, ছাগল, ভেড়া ও হাঁস-মুরগি লুটপাটের ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। মৃত হাসমত আলী স্ত্রী সিকনা বেগম বাদী হয়ে বাঘারপাড়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ ও সাবেক এমপি রনজিত কুমার রায়ের ছেলে রাজিব রায়সহ ৩১ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাতনামা আরো ২০জনের বিরুদ্ধে এই মামলাটি করেছেন। বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল মামলাটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি পুলিশ যশোর জোনকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন,বাঘারপাড়া মহিলা কলেজের প্রিন্সিপ্যাল আজগর আলী, একই উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ইকরাম হোসেন, মোসলেম আলী, লিটন হোসেন, সাহাবুর, হারুন, দিপংকর, উত্তর শ্রীরামপুর গ্রামের বিল্লাল কবির, নলডাঙ্গা গ্রামের মনির, মুছাম সরোয়ার, খোকন, আজিম রাসেল, ইউনুস, লাল্টু, সেলিম রেজা বাদশা, ফেরদাউস, আনিচুর, সুহান, সুবোল, রায়পুরের বিল্লাল, ছিলোমপুরের নজরুল, সালবরাটের হুসাইন, তৎকালিন বাঘারপাড়া থানার এসআই খালেদুর রহমান, পাইকপাড়ার হেলাল, ধুপখালীর শের আলী ও চঞ্চল।
বাদী সকিনা বেগম মাগুরার শালিখা উপজেলার কাদিরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মামলায় বলেছেন, বাঘারপাড়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের কাতলামারী বিলে ইছা মেম্বরের একটি খামার আছে। ওই খামারে গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস, মুরগি এবং মাছের চাষ করা হয়। সেখানে বাদীর স্বামী হাসমত আলী দেখাশুনার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। কিন্তু বাদীর স্বামী বিএনপি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। মাঝেমধ্যে মিটিং-মিছিলে যেতেন। আসামিরা তাকে মিটিং-মিছিলে যেতে নিষেধ করতো। রাজি না হওয়ায় তার ক্ষীপ্ত হয়ে খামারের রু, ছাগলসহ বিভিন্ন জীনবন্ত পণ্য লুটপাট করার হুমকি দিতেন। ২০২১ সালের ৮ জুন সকাল ১০টার দিকে আসামিরা সেই খামারে যান। সেময় হাসমত আলীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
রাজি না হওয়ায় ওই খামার থেকে ভেড়া, ছাগল, ক্যাম্বেল ও বেলজিয়াম হাঁস ও মুরগি লুটপাট করে নেয়। ঠেকাতে গেলে হাসমত আলীকে তারা মারপিট করেন। একই বছরের ১০ জুন এই ব্যাপারে যশোর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করা হয়। কিন্তু অদ্যবধি সেই মামলা আলোর মুখ দেখেনি। চলতি বছরের ২ জুন আবারও আসামিরা বাদীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। রাজি না হওয়ায় তিনটি গরু, পাঁচটি ছাগল ও দশটি ভেড়াসহ ছয় লাখ টাকার পশু নিয়ে যান। বাধা দেয়ায় আবারও হাসমত আলীকে মারপিট করে। ওই সময় অসুস্থ্য হয়ে পড়লে রায়পুর বাজারের হামিদ ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নেন। চলকি বছরের ৭ জুন রাত ১১টার দিকে আবারও অসুস্থধ্য হয়ে পড়লে তাকে বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার সময় সালবরাট গ্রামে পৌছানো মাত্র হাসমত আলী মারা যান। থানা কর্তৃপক্ষ অনিহা প্রকাশ করায় আদালতে এই মামলাটি করা হয়েছে।